অনুভূতি ও ইচ্ছার অগোচরে

কয়দিন করেই লিখবো লিখবো ভাবছিলাম। ইচ্ছে করেই বসিনি, কারণ বসলেই তো অনেকটা সময় চলে যাবে! এই সময়টুকুও অনেক সময় অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। কিন্তু আসল কথা কী ...? যেটা ভেবে লিখবো ভেবেছিলাম, সেই ভাবনা গুলোর ছিটেফোঁটাও ঠিক এই মূহুর্তে আমার মাঝে নেই।

এই মূহুর্তে আমার মন বড্ড খারাপ। যাকেই কথা গুলো বলতে যাবো– কেউ বুঝবে না জানি। সবাই তার মতন করে বিচার করতে যাবে। অথচ আমার জীবন আর তার অনুভূতি গুলো একদম ব্যতিক্রম। সবার জীবনই ব্যতিক্রম তা জানি। অন্য সময় নানা রকম কথা শোনা যায়, উপদেশ উপেক্ষাও হয়ত সহ্য করা যায়– কিন্তু যখন কিছু নিয়ে হঠাৎ-ই মন খারাপ, তখন এটুকুও অসহ্যবোধ হয়। তাই সবকিছু বাদ দিয়ে লিখতে বসে গেলাম। 
মানুষের গড়ে ওঠায় তার আদর্শের উপস্থিতি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা বারবার উপলব্ধি করছি। ছেলেবেলায় কত অকলঙ্ক ছিলো চিন্তা গুলো! ক্রমে তা কেবলি ফিকে হয়ে এসেছিলো। ফিকে হতে হতে একটা সময় এমন হলো যে সেই সুন্দরের অস্তিত্বটুকুই টের পেতাম না! অথচ ব্যাপারটা এমন না যে পুরোটাই আমার হাতের নাগালের বাইরে ছিলো। হয়ত কিছুটা করার ছিলো আমার, হয়ে উঠেনি। বরং আমি আমার অবস্থার বেশিরভাগটাকেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে পেয়েছিলাম। ক্ষুদ্র জিনিস নিয়ে বেশি চিন্তা আর অর্থহীন কাজের অনেক অভ্যাসকে রপ্ত করেছিলাম নিজের অজান্তেই, স্রোতের বিপরীতে নিজেকে ধরে রাখার যেই প্রচেষ্টা, সেটার অনেক অভাব ছিলো। আর আমি অনেকটাই নিরূপায় হয়ে দেখেছি আমার নিজের ক্রমাগত বদলে যাওয়া। বদলে যাওয়ার চাইতে ক্ষয়ে যাওয়া বললে আরো বেশি সঠিক হবে। সেই ক্ষয়ের ক্ষতিটুকু কত ব্যাপক তা কেবল আমি জানি!
তারপর... অনেক বছর পর যখন নীড়ে ফিরার চেষ্টা করছি মাথা ঠান্ডা করে, তখন এই জীবন নিয়েই কত-শত সমস্যা! এই সমস্যাদের ভীড়ে কখন আমি আবার এই আমি’র দিকে খেয়াল করবো তা-ই বুঝে পাইনা! ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র একটা দৈর্ঘ্যের জীবনটার পর যে বিশাল ব্যাপ্তির অনন্তকাল অপেক্ষায় আছে– তার চিন্তাও আমাকে মাঝে মাঝেই ভাবায়। কিন্তু খানিক পরেই আবার ভুলে যাই সব! মুক্তি কী করে হবে আমার...? আমি কেন যে ধরে রাখতে পারিনা নিজের সেই লাগামি খানি...!
মাঝে মাঝে যখন হঠাৎ আজকের মতন অস্থির লাগে, যখন নিজেকে নিজে বুঝিয়ে শান্ত করতে পারিনা...। নিজের দুঃখ- কষ্টকে মাঝে মাঝে কারো সাথে শেয়ার করতে ইচ্ছা করে, কারো কাছে বলতে ইচ্ছা করে, কারো উপর  নির্ভারশীল হতে ইচ্ছা করে ... তবে কি আমি স্বার্থপর  হয়ে যাওয়ার পথে...??? না কি এই ইচ্ছা থাকাটা স্বাভাবিক...??? বুঝি না...