জীবনটা সম্পর্কের মায়া জালে আবদ্ধ। এই মায়া জালটাই সম্পর্কটাকে বাঁচিয়ে রাখে, জীবনের অক্সিজেন, জীবনের বেঁচে থাকার প্রেরণা।
জীবনে তুমি নামের অনেক গুলো সম্পর্ক থাকে। তবে একটা বিশেষ তুমি জীবনটায় অনেক আলাদা অর্থ বহন করে। সে হয়তোবা প্রথম থেকেই পরিচিত থাকে না, হুট করে খুবই আচমকা এসে আঙুলের ফাকা জায়গা গুলো পূরণ করে দেয় বা হয়তো আগে থেকেই পরিচিত থাকে কিন্তু হুট করে এসে তুমি নামের অর্থটার নতুন রুপ দেয়। এই তুমি নামের সম্পর্কটার অনেক গুলো বিশেষায়িত দিক থাকে। যাকে অন্য সবার থেকে আলাদা মনে হয়, যে কখনোবা মন খারাপের কারণ হয়, কখনোবা আনন্দ জলে স্নান করায়, কখনোবা গুণ গুণ করে গান গাওয়ার কারণ হয়, কখনবা উদাস মনে একলা পথে হাটার কারণ হয়।

জীবনে তার আবির্ভাবে অগোছালো সব নিয়ম গুলো শৃঙ্খল হয়ে উটে। সাদা-মাটা স্বভাব গুলো সব বদলে যেতে শুরু করে। তুমি করে ডাকা মানুষের অভাব হয় না, কিন্তু এই একটা বিশেষ তুমিতেই যেন সব ভালোলাগা আটকে থাকে, এই তুমিতেই যেন সব খুশি লুকায়িত থাকে। এই তুমির সব পছন্দ গুলো পছন্দের আর অপছন্দ গুলোও নিজের অপছন্দের তালিকায় জায়গা করে নেয়। একসময় ভালো না লাগা জিনিসটাও হয়ে উঠে অতিপ্রিয়, কখনো কোনদিন মুখে না নেওয়া খাবারটাও যেন তখন অনেক সুস্বাদু। তখন নিজের প্রতি অন্য কারো জন্য হলেও একটু অতিরিক্ত কেয়ার চলে আসে, নিজের মাঝে অন্য কারো অস্তিত্ব অনুভব করে। রাস্তায় হঠাৎ করে কারো সাথে ধাক্কা খেলে নিজের দোষ না হলেও সরি বলে চলে আসতে ইচ্ছে করে, কোনদিন ফুলের সুভাষ না নেওয়া মানুষটারও ফুলের দোকান দেখলে সব গুলো ফুল কিনে নিতে ইচ্ছে জাগে, পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া বকুল ফুলের মালা নিয়ে যাওয়া লোকটির কাছ থেকে সব গুলো মালা কিনে ফেলতে ইচ্ছে করে। রেস্টুরেন্টের দামি খাবার গুলোর থেকে রাস্তার পাশের ফুসকা আর চটপটি গুলো খেতে বেশি ভালো লাগে। হাতের মোবাইলটা তখন হয়ে উঠে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস, সবসময়ের খোলামেলা স্বভাবটায় একটা প্রাইভেসি চলে আসে। পরীক্ষার খাতায় নিজে থেকে দুই লাইন লিখতে না পারা ছাত্রটাও তখন কবিতা লিখতে শিখে যায়।

সবকিছুতেই একটা পরিবর্তন আসে। পছন্দের রঙে পরিবর্তন আসে, আইসক্রিমের ফ্লেভারে পরিবর্তন আসে, সাচ্ছন্দে পরা কাপড়টায় পরিবর্তন আসে, চুলের কাটে পরিবর্তন আসে, সেভ করা মুখে দাড়ি গজায়, হাটার Style-এ পরিবর্তন আসে...।। এই সব কিছুই সেই একটা বিশেষ তুমির কারণে। এই তুমিটাই তার জীবনের আল্লাদ, ইচ্ছা, পূর্ণতা, জীবনের রং...।। এই তুমিটার জন্যই মানুষ বেঁচে থাকে, বেঁচে থাকার আশা জাগায়, জীবন স্বপ্ন দেখে...।।



প্রতিটা মানুষের জীবন-ই ভিন্ন, প্রতিটা মানুষের জীবনের কথা ভিন্ন।
আমি যে সব সময় Impulse / Emotional-এর উপরে চলি তা কিন্তু না। তবে আমি অতি মাত্রায় Emotional- এটা সত্য।
কাজে-কর্মে, চিন্তাভাবনায় আমি শুধু যে গোছানো তা নয়, অসম্ভব গোছানো। পান থেকে চুন খসা যাবে না এই type-এর গোছানো। ১৯-২০ হওয়া যাবে না, ১৯ হলে ১৯-ই, ২০ হলে ২০-ই। আকাশ কুসুম চিন্তা করা কখনোই ছিল না, যা এখনও নই। হয়তো হবে, হয়তো থাকবে, হয়তো / যদি এই Word গুলো আমার Dictionary-তে নেই। হয় হবে আর নয়তো না। সব সরল রেখায় হতে হবে, হতে হবে বললে ভুল হবে। হতেইই হবে...তাল মিলানো স্বভাবটা খুবই অপছন্দ, হ্যাঁ তে হ্যাঁ আর না তে না তাল মিলাতে পারি না। "হ্যাঁ" তে "না" আর "না" তে "হ্যাঁ" বলতে পারি দেখে বেশির ভাগ মানুষের কাছেই অপছন্দের পাত্র। কখন কী করবো, কতক্ষণ করবো তা আগে থেকেই ঠিক করে রাখা। Confusion-, দোটনা কখনোই কাজ করে না। কাজ করবো বলেছি মানে কাজটি আমি করবোই, করতেই হবে। দু'বার ভাবার সময় নেই। কাজটি করতে কতোটা ধকল, কষ্ট পোহাতে হবে সেটা কোন বিষয় নয়... কঠিন রুটিন। সময় ভাগ করা...
তারপরোও হঠাৎ হঠাৎ কেন জানি মাথা এলোমেলো হয়ে যায়। হঠাৎ কেমন যেন কিছু জিনিস সরল রেখা থেকে বাকা পথে চলে যায়। এতো কঠিন রুটিন থেকে কিভাবে যেন কিছু ছুটে যায়, কিছু জিনিস এদিক-সেদিক হয়ে যায়। মাঝে মাঝে উদ্ভট একেকটা কাণ্ড করে বসি। কোনো সুস্থ মাথার মানুষ যা কখনো করবে না।
মাঝে মাঝে এলোমেলো হতে ইচ্ছে করে...।।

সকলের সাথে আমার মিশি না, সকলের সাথে আসলে আমাদের মন মিশার ইচ্ছা প্রকাশ করে না। আপন সকলকে ভাবা যায় না, তাই আপন মানুষের সংখ্যা কম। সবাই আপনত্বের অধিকার পায়না, সবাই আপন হতে পারে না।
"যত ঝগড়া আর রাগারাগি সব কাছের, আপন মানুষের সাথেই হয়। একটা মানুষ যত বেশি তোমার সাথে মিশবে, তুমি যতো বেশি তার সাথে মিশবে,  দিনের পর দিন তোমার প্রতি ঐ মানুষটার Expectation  একটু একটু করে বাড়তে থাকবে । একটা সময় তুমি যখন তার কাছের মানুষ হয়ে যাবা, নিজের মানুষ হয়ে যাবে,  মানুষটা তোমার কাছ থেকে নিজের অজান্তেই অনেক বেশি Expect করা শুরু করবে ।।
খুব সকালে ঘুম ভাঙতেই মানুষটা Expect করবে, তুমি তার খোঁজ নিবে, তোমার ফোনেই তার ঘুম ভাঙ্গুক, ভোরের “শুভ সকালটা” তাকে বলেই শুরু হোক।। এই সময়টায় তোমার সামান্য নীরবতাই তখন তাকে ভয়াবহ রাগিয়ে দিবে। মানুষটা নিজেও জানবে, সে সামান্য ব্যাপারেই তোমার উপর বেশি রাগ করে ফেলেছে, অনেক কথা শুনিয়ে ফেলেছে। সে সব জানবে, বুঝবে কিন্তু মানবে না । হয়তো অনেক সময় তার এই রাগ, অভিমানটা নিজের মাঝেই রেখে দিবে প্রকাশ করবে না। সব দোষ ঐ " Expectation " এর ।।
পুরো পৃথিবীর সবাই ব্যস্ত থাকুক, সমস্যা নেই। কিন্তু তুমি ব্যস্ত থাকলে তার পৃথিবীটাই উলটে যাবে, সে অস্থির হয়ে যাবে।সে তোমার এই ব্যস্ততা মেনে নিতে পারবে না। মানুষটা মনে প্রাণে চাইবে, শত ব্যস্ততার মাঝেও তুমি তাকে সময় দাও, তার একটু খোঁজ নাও, তার সাথে একটু কথা বলো। সেই চাওয়া যখন পূরণ হয় না, তখনই কষ্ট হয় ... ভীষণ কষ্ট ...।। এই কষ্টের কোন নাম নেই, এই কষ্ট বুঝানো যায় না। সে যে কষ্ট পেতে পারে, তার যে খারাপ লাগতে পারে এটা তোমাকেই বুঝতে হবে, বুঝে নিতে হবে...।।
কারণ ছাড়াই যে মেয়েটা বা ছেলেটা তোমার উপর রাগ দেখায়, তাকে ভুল বুঝো না। একটু উনিশ-বিশ হলেই যে ছেলেটা বা মেয়েটা তোমার উপর মন খারাপ করে বা, Over-React করে, তাকে দূরে ঠেলে দিও না ।। এই মানুষটার কাছেই তুমি সব চেয়ে ভালো থাকবে, সুখি থাকবে।
কারো "কাছের মানুষ" হওয়াটা সহজ ব্যাপার না। চারপাশের হাজার হাজার মানুষের মাঝে কেউ একজন তোমাকেই খুব আপন ভাবে, তার একটুখানি অত্যাচার সহ্য করতে পারবে না তুমি ?? তোমাকে যে আপন ভাবে তার চেয়ে তুমি বেশি Lucky একটু ভেবে দেখো। কারণ, হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে তোমাকেই সে আপন ভেবেছে, আপনত্ব দিয়েছে।।
অন্যান্য সব অত্যাচারের ভেতর যন্ত্রণা মেশানো থাকে, কিন্তু কাছের মানুষের অত্যাচারের ভেতর ভালোবাসা মেশানো থাকে ...।। এই ভালোবাসা অনেক দামী, অনেক খাঁটি...।।

MARI themes

Powered by Blogger.