আমাদের জীবনের ভাললাগা- খারাপ লাগার বেশির ভাগই নিজের চেয়ে অন্যের উপর নির্ভর করে। খুব ছোট্ট কোন কারনেই মন খারাপও হয়ে যায় আবার খুব ছোট্ট কোন কারনেই মন ভালো হয়ে যায়। এই ভালোলাগা, খারাপ- লাগাটা কিন্তু নিজের উপর নির্ভর করে না। সময় ভেদে মানুষও পরিবর্তন হয়।
বাল্যকালে ভাললাগা-খারাপ লাগা বাবা-মা, ভাই-বোনের উপর নির্ভর করে, আসতে একটু বড় হওয়ার সাথে সাথে বন্ধু-বান্ধব যোগ হয়। সময় বাড়তে বাড়তে যদি সে কাউকে ভালোবেসে ফেলে তখন তার এই ভালোলাগা-খারাপ লাগাটা নির্ভর করে ঐ ভালোবাসার মানুষটির উপর আর বিবাহিত জীবনে নির্ভর করে স্ত্রী, সন্তানের উপর, পুরো পরিবারের উপর।

যখন আপনার ভালোলাগা খারাপ লাগাটা আরেকটি মানুষের উপর নির্ভর করবে তখন আপনার সব কিছুই অন্য একজনের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। তখন আপনার মাঝে আপনি থাকলেও আপনার মনকে Control-করবে অন্য একজন মানুষ। এই সময়টা তখন হয় যখন আপনি কাউকে ভালবেসে ফেলবেন, মনের মনি কোঠায় তাকে জায়গা দিবেন, কাউকে মন থেকে বন্ধুত্বের সর্বোচ্চ আসনে বসাবেন।

একটা সময় আপনি বুঝতে পারবেন ঐ একটা মানুষের জন্যই আপনার চিন্তা হচ্ছে, ঐ মানুষটাকে নিয়েই আপনি ভাবছেন, ঐ মানুষটা ভালো থাকলে আপনিও ভালো আছেন, ঐ মানুষটার ছোট্ট বিপদের কথা শুনেই আপনি অস্থির হয়ে যাচ্ছেন, ঐ মানুষটার অনুপস্থিতির মুহূর্তই আপনাকে সবচেয়ে বিষন্নতা, মন খারাপের চরম পর্যায়ে নিয়ে যায়। ঐ একটি মানুষের একটু উপস্থিতিতে আপনার মুখে হাঁসি ফোটে, মনে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। যখন আপনার খুব বেশি মন খারাপ থাকবে খেয়াল করে দেখুন তখন আপনার ঐ মানুষটার কথাই মনে পড়বে, ঐ মানুষটার কথাই ভাববেন। মন খারাপের সময় প্রিয়জনের কথাই প্রথমে মনে পড়ে, বেশি মনে পড়ে।

যার উপর আপনার ভাললাগা-খারাপ লাগা, আপনার মনের হাঁসি কান্না নির্ভর করে সে আর কেউ নয়, আপনার সবচেয়ে কাছের মানুষ। এ রকম অনুভূতি সবার জন্য আসে না, সবার জন্য আসা সম্ভবও নয়।
যখন নিজের ভাললাগা, খারাপ লাগা আরেকজন মানুষের উপর নির্ভর করে তখন খুব কম সময়ই ভালো থাকা হয়। কারণ, হয়তো তাকে আপনি বুঝাতে পারেন না যে তার জন্য আপনার আজ মন খারাপ, হয়তো সে বুঝেও অবুঝ হয়ে থাকে, হয়তো তার এই কথা - ব্যবহারের জন্য যে আপনার মন খারাপ হতে পারে সেটা সে বুঝতেই পারেন না বা গুরত্বই দেয় না। তখন অনেকটা কাঠের পুতুলের মতো অবস্থা হয়।

কারো জন্য যদি আপনার মনে শূন্যতা সৃষ্টি হয়, তার অনুপস্থিতি যদি আপনার মনকে অস্থির করে তোলে, শূন্যতার সৃষ্টি করে তাহলে বুঝে নিবেন সে আপনার অনেক কাছের, অনেক আপন একজন মানুষ। সেই একমাত্র মানুষ যার উপস্থিতিতে আপনি ভালো থাকবেন, হাজার মানুষের ভিড়েও আপনি যে একাকীত্বে ভুগতেন সেই একজন মানুষের উপস্থিতিতেই একাকীত্ব দূর হবে। ভালোথাকাটা এই একটি মানুষের হাত ধরেই, এই মানুষটাকে ঘিরেই। আপনার মনের প্রবাহ, গতিবেগ এই মানুষটাকে ঘিরেই।

আপনার অনুপস্থিতিতে যখন আরেকজন মানুষের মনে আপনার জন্য অসীম শূন্যতার সৃষ্টি হয় তখন বুঝে নিবেন আপনি পৃথিবীতে সবচেয়ে ভাগ্যবান/ভাগ্যবতী একজন মানুষ।
"He or She really Care about You, Your emotion and badly Care about your Single Moment."

কিছু বিষয়, কিছু কথা আমরা মনের চোখ দিয়ে দেখি না, বিবেকের চোখ দিয়ে দেখি না কিন্তু সেই বিষয়টাই যদি বিবেকের চোখ দিয়ে দেখা হতো তাহলে ফলাফল অনেক ভালো কিছুই হতে পারতো।
যার হাত ধরে আপনি বিপদে থেকে মুক্তি পেলেন, যে আপনার অন্ধকার পথের সহযোগী, যার জন্য আপনি নিজেকে নতুন ভাবে উপস্থাপন করতে পারলেন, অন্ধকার থেকে আলোর মুখ দেখলেন সেই মানুষটাকেই আপনি আজে-বাজে কথা শুনিয়ে দিলেন, মিথ্যা কিছু অপবাদ, অভিশাপ দিয়ে দিলেন কিন্তু আদৌ কি সে এগুলো পাওয়ার মতো ছিল...!!! কথা গুলো তাকে বলার আগে একবার কি ভেবেছেন কাকে কথা গুলো বলচ্ছেন, মানুষটা কে...?? এই মানুষটাই কিন্তু সেই মানুষটা যে মানুষটা আপনার সব চেয়ে কষ্টের, বিপদের মুহূর্তে পাশে ছিল, আপনার কান্না ভেজা চোখে হাঁসি ফুটিয়েছে। এই মানুষটাই আপনাকে বারবার টেনে তুলেছে যখন আপনি বারবার হোঁচট খেয়ে পড়ে যাচ্ছিলেন।।হয়তো ভুলে গিয়েছেন...
মানুষ বড়ই ভুলোও মনো, খুব সহজেই অতীত ভুলে যায়।।
যে মানুষটাকে আপনার সর্বোচ্চ সন্মান দেওয়া উচিত ছিল, সেই মানুষটাকেই আপনি অসন্মান করে বাজে কথা বললেন।। আপনার কি মনে হয় আপনি তার কাছ থেকে সন্মান পাবেন। তার কথা বাদ-ই দিন, অন্য কারো কাছ থেকে কি কখনো সন্মান পাবেন...!!! কখনোই না...।। যাকে সবচেয়ে বেশি সন্মান দেওয়া উচিত ছিল সেই মানুষটাকেই আপনি সন্মান দিতে পারলেন না তাহলে ঐ মানুষটা বা অন্য কারো কাছ থেকে কিভাবে ভালো কিছু বা সন্মান আশা করেন...!!?? নিজেকেই একটু প্রশ্ন করে দেখুন...

জীবন এতো সোজা নয়।। আপনি তার জন্য কিছু করতে না পারলেও তাকে অন্তত আপনার ছোট করা উচিত নয়, তাকে অপমান করা উচিত নয়। At least-তার প্রতি আপনার কৃতঞ্জতা স্বীকার করা উচিত ছিল। জীবনের কোন একটা সময় হয়তো আপনি ঠিকই বুঝতে পারবেন সেই মানুষটা আপনাকে কতোটা সামনের দিকে এগিয়ে দিয়েছে, যার জন্য আপনি বর্তমানে দাঁড়িয়ে আছেন কিন্তু তা বর্তমানে আপনি বুঝতে পারচ্ছেন না। আচ্ছা, যখন আপনি বুঝতে পারবেন তখন ঐ মানুষটার কাছে আপনার ব্যবহারের জন্য  Sorry-বলার জন্য তাকে খুঁজে পাবেন তো, Sorry-বলার সময় পাবেন তো...??
মনে রাখবেন জীবনের মোড় ঘুড়তে সময় লাগে না...।।

Virtual Life, Virtual জগত নিয়ে কিছু একটা লিখার খুব ইচ্ছা ছিল। কিন্তু কিবা লিখার আছে তা জানা নেই। ভার্চুয়াল- Life- আমার পছন্দ না সেই প্রথম থেকেই। মাঝে মাঝে মনে হয় সব কেমন যেন ভার্চুয়াল হয়ে যাচ্ছে।।ভার্চুয়াল জগত টা কেমন যেন মিথ্যা, সত্য বলতে কিছুই খুঁজে পাই না...।।
আমি খুব ছোট্ট একটি Example-দিয়ে বিষয়টাকে Clear-করবো। ১ দিসেম্বর-২০১৬ আমি Facebook-এ traveling to Darjeeling দেই। বিষয়টা তখনও এতোটা Serious-ভাবে দেখিনি কিন্তু হঠাৎ বিষয়টা আমাকে খুব ভাবিয়ে তুললো। মনে কেমন যেন খচ খচ করতে লাগলো, কেমন যেন একটা অস্থিরতায় ভুগতেছিলাম। কয়েকজন আমাকে জিজ্ঞাস করেছে হঠাৎ দেশের বাহিরে কেন, হঠাৎ India-কেন...? আমি কিছুই বলতে পারিনি। আমার আপু যখন জিজ্ঞাস করলো তখন নিজের কাছে নিজেকে খুব বেশি ছোট লাগলো, কিছুই বলতে পারতেছিলাম না। কি বলবো, এতো বড় মিথ্যা...!!! মজা করতে গিয়ে বোনের কাছে মিথ্যাবাদী হবো...!!! ভাবতে পারতেছিলাম না...বিষয়টি কিন্তু মোটেই ছোট নয়। বিষয়টি জীবনের সব চেয়ে গুরত্ব পূর্ণ বিষয় বিশ্বাস-অবিশ্বাস নিয়ে। বিশ্বাস-অবিশ্বাস কি এতোটাই তুচ্ছো...!!! না, কখনোই নয়।।
এরকম মিথ্যা হাজারটা আমরা বলি প্রতিনিয়ত। ফোনের এ প্রান্তে দাঁড়িয়ে বলছেন আপনি ঢাকা, কিন্তু আপনি তখন ঢাকার বাহিরে বা অন্য কোন জায়গায়।
আপনার মনটা কোন কারণে খুব খারাপ। Facebook-এ Status-দিলেন feeling sad, সাথে কিছু আবেগময় কথা...।। বাহহ মন খারাপের অনুভূতি প্রকাশ করা হয়ে গেলো। কতো সহজ তাই না...!!!
 Virtual Life- আমাদের সকলের সাথে Communication-কতোটা ভালো করেছে তা জানি না, কিন্তু আমার মনে হয় কাছের মানুষদের সাথে Communication gap-সৃষ্টি করেছে অনেক বেশি। এখন কেউ আড্ডা দেওয়ার প্রয়োজন মনে করে না, খেলাধুলা করার প্রয়োজন মনে করে না। সকলের সাথে Chat-তো হচ্ছেই, mobile games-তো আছেই।  একটা মানুষের সাথে ২ ঘণ্টা Chat-করুন আর ঐ মানুষটার সাথেই ১০ মিনিট এর জন্য দেখা করে কথা বলে দেখুন কোনটা ভাললাগে। দেখা করা, আড্ডা দেওয়ার মাঝে এক ধরনের মনের আত্মতৃপ্তি আছে, এক ধরনের সজীবতা আছে যা আপনি সারা দিন ফোনে কথা বলে, Chat-করেও পাবেন না।
ধরুন আজ আপনার Birth Day. সকলেই আপনাকে Facebook-এ wish করতেছে। আপনাকে ফোন করে বা Mobile-SMS খুব কম মানুষ-ই দিবে কারন বাকিরা কেউই মনে রাখেনি। মনে তারাই রাখে যারা কাছের, আপন। Facebook-এ Notification-দেখে যারা আপনাকে Wish- করতেছে তাঁরা Just Formality-দেখাচ্ছে, এছাড়া আর কিচ্ছু না। তাঁরা জানেও না আপনার জন্মদিন কবে, বিশ্বাস হলো না...!! তাহলে একদিন পর তাকে Ask-করে দেখুন, দেখবেন সে বলতে পারবে না।
সব কিছুরই ভালো - খারাপ দু'টি দিকই আছে। তবে কিছু জিনিসের ভালোটা জেনেও আমরা খারাপটাই বেছে নেই।
ভার্চুয়াল জগত টা মানুষের বিবেক, বুদ্ধি, সন্মান বোধ সব দিন দিন কমিয়ে দিচ্ছে।।
"A virtual life is easier than real life, but it is really no life at all."


MARI themes

Powered by Blogger.