বিশ্ববিখ্যাত লিংকিং পার্কের গায়ক চেস্টারের কিসের অভাব ছিলো যার কারণে সে আত্মহত্যা করেছে..?!!! জগদ্বিখ্যাত আমেরিকার বিখ্যাত লেখক জিন স্টেইনের কিসের এতো অভাব ছিলো যার কারণে তাকে পনের তলা থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করতে হয়েছিলো..?!!! দক্ষিণ আফ্রিকার বিখ্যাত লেখক ক্যারেল শুম্যানের যার ডজন খানিক উপন্যাস জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিলো তার বা কিসের অভাব ছিলো যার কারণে আত্মহত্যা করতে হবে..!!!

আমরা যেখানে সামান্য একটু প্রাপ্তিতে যুগ যুগ বেঁচে থাকতে চাই সেখানে অসামান্য ব্যক্তিরা কেনো যুগে যুগে আত্মহত্যা করে নিজেকে শেষে করে দিয়েছেন বা দিচ্ছেন..! কারণ, নিজেদের নিজে আমরা বুঝতে পারি না। জীবনে আমি কি কি পেয়েছি সেটার হিসেব করি না কখনো। কি কি পাইনি সেগুলোর হিসেব নিয়ে প্রতিটা সেকেন্ড মস্তিষ্ক আমাদের জ্বালাতে থাকে, কুটকুট করে কামরায়। হতাশার রুগী বানিয়ে ছেড়ে দেয় আমাদের, দিনের পর দিন Depression-এ ভুগায় চরম ভাবে, খুব বেশি বিষন্নতায় ভোগায়। মনের অশান্তিতে ভুগা মানুষের সংখ্যা বড্ড বেশি। 

মানুষ কেন বিষন্নতায় ভোগে..?? এর কোনো সহজ উত্তর নেই। নানা কারণেই বিষন্নতায় গ্রাস করে মনকে। মানসিক চাপ থেকে বিষন্নতায় ভোগে মানুষ, হয়ে পড়ে অবসাদগ্রস্থ, দ্বিধাগ্রস্থ। "পরিবার বিচ্ছিন্নতা, প্রিয় মানুষকে হারানোর বেদনা, প্রিয় মানুষের থেকে পাওয়া অবহেলা, খুব কাছের মানুষ হঠাৎ অচেনা হয়ে যাওয়া, হঠাৎ বদলে যাওয়া মানুষকে বিষন্নতার দিকে নিয়ে যায়।" Caring, Sharing-করার মতো মানুষের সংখ্যা কমেছে, কমেছে ভাললাগা - খারাপ লাগা মন খুলে বলার মতো মানুষের। নিজের মনোকষ্টের কথা, খারাপ লাগা গুলো অপরজনের কাছে খুলে বলা  মানুষের সংখ্যা এখন নেই। যে বিষয়টি  কেউ একজন মনোযোগ দিয়ে শুনবে, বুঝবে, অন্যদের কাছে গোপন রাখবে এবং শক্ত করে হাতটি ধরে রাখবে, সাহস জুগাবে। এই বদলে যাওয়া আচরণ বিষন্নতাকে বাড়িয়ে দেয় দিনকে দিন। মন ভালো রাখার জন্য মনের কথা শেয়ার করা খুব বেশি প্রয়োজন, খুব বেশি প্রয়োজন একজন আস্থা রাখার মতো মানুষের। 

জীবন যন্ত্রণা থেকে মানুষ আক্রান্ত হয় বিষন্নতায়। তার আবেগে ধস নামলে জীবনকে শূন্য মনে হয়, আশাহীনতা গ্রাস করে, মন শূন্যতায় ভরে যায়। এই অবস্থা যদি কোনো ব্যক্তির কিছু দিন চলতে থাকে তবে সে বিষন্নতায় আক্রান্ত হয়ে যায়। এই অবস্থা আরো ভয়াবহ হলে সেই ব্যক্তি আত্মহত্যার কথা ভাবতে থাকে। মানসিক রোগের মাত্রা, মানসিক চাপ আরো বেশি বেড়ে গেলে মানুষ আত্মহত্যা করেন।

বিষন্নতায় আক্রান্ত ব্যক্তি শুধুমাত্র আবেগ সংশ্লিষ্ট মানসিক অশান্তিতেই ভোগে না। বরং নানা উদ্ভট চিন্তা-ভাবনা, শারীরিক, মানসিক এবং চলাফেরাতেও তা প্রকাশ পায়। একজন বিষন্নতায় আক্রান্ত মানুষ নানা উপসর্গে ভোগে। বিষাদময় অনুভূতি, হতাশা, সবকিছু অর্থহীন-মূল্যহীন ভাবা, মনের আনন্দ হারিয়ে ফেলা, ক্ষুধামন্দা, ওজন কমে যাওয়া, নিদ্রাহীনতা, চলার গতি ধীর হয়ে যাওয়া, অনেকটা অস্থিরতা। শেষে সে  মৃত্যুচিন্তা বা আত্মহত্যার কথা ভাবতে থাকে।

MARI themes

Powered by Blogger.