"প্রতিদিন খোঁজ রাখা মানুষটাও একদিন হারিয়ে যাবে যদি তুমি একদিনের জন্য হলেও তার খোঁজ না নাও। প্রতিদিন ভালোমন্দ বুঝে শাসন করা মানুষটাও একদিন আর তোমাকে শাসন করবে না যদি তুমি তাকে মূল্য না দাও, দিনের পর দিন অবহেলা করো। তোমাকে উপকার করা বন্ধুটাও একদিন তোমাকে ভুলে যাবে যদি তার উপকারের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করো। জগতে এ নিয়মের বাহিরে কেউ নেই, বাহিরে কেউ থাকে না।। এতো কিছুর পরো তুমি হয়তো এমন একজনকে পাবে যে তোমার খোঁজ রাখে, যার খোঁজ তুমি কখনোই রাখো না। যে তোমার হাজার ঝাড়ি, হাজার কথা শুনার পর মন খারাপ করে একটু পর আবার ফিরে আসে। যে কিনা তোমার জন্যই সব কিছুকে বিপরীত দিকে ঠেলে দেয়; এগুলো শুধু তোমার জন্যই এটা তোমাকে বুঝতে হবে। 

একটা গাছকে তুমি যত যত্ন নিবে যত পরিচর্যা করবে গাছটি আরো তত দ্রুত বড় হয়ে তোমাকে ছায়া দিতে থাকবে। যদি গাছটির পরিচর্যা না করো গাছটি শুকিয়ে মারা যাবে। তেমনি প্রতিদিন খোঁজ রাখা মানুষটাও যদি তোমার বিন্দুমাত্র নজর না পায়, প্রতিটা কথায় অবহেলা পায় তাহলে সেও একদিন তোমার কাছ থেকে দূরে সরে যাবে; দূরে সরে যেতে বাধ্য হবে। মনে তোমাকে ঠিকই রাখবে কিন্তু তোমার সামনে হয়তো আর সে আসবে না। যদি গাছটির দরকারই তোমার জীবনে আর না থাকে; সে ক্ষেত্রে গাছের যত্ন নেওয়ার কিছু নেই। তেমনই যদি ঐ মানুষটাকে যদি তোমার আর দরকার না লাগে বা তাকে ছাড়াই যদি তুমি ভালো থাকো তাহলে তার খোঁজ রাখার কোন প্রয়োজন তোমার মাঝে কাজ করবে না। 

তুমি ছোটদের একটা আদেশ করলে সে যদি তোমার আদেশটি অমান্য করে তাহলে পরবর্তীতে তুমি তাকে আদেশ করতে যাবে না, কারণ সে তোমাকে মানে না। তেমনি ভাবে কেউ একজন তোমার ভালোমন্দ বুঝে তোমাকে শাসন করে আর তুমি যদি তাকে গুরুত্ব না দাও, মূল্যহীন ভাবো সেও একদিন তোমার উপর থেকে অধিকার করা বন্ধ করে দিবে।। তাচ্ছিল্য, অতি মাত্রায় অবহেলা একটা মানুষ খুব বেশি দিন সহ্য করতে পারে না। ছয় মাস, আট মাস, এক বছর...!! আর যদি তোমাকে খুব বেশি ভালোবেসে থাকে তাহলে এক বছর, দুই বছর বা তার বেশি এই অবহেলা হয়তো সহ্য করবে। একটা সময় তোমার অবহেলা পেতে পেতে বাঁচতে শিখে যাবে, শিখে যাবে কষ্টের মাঝে কিভাবে হাসতে হয়। তুমি হয়তো ভাববে সে তোঁ ভালোই আছে। তাহলে কি সব নাটক ছিল...!! কিন্তু বাস্তবে হলো সে যে এখনো আগের মতোই তোমাকে চায়, তোমার আশে-পাশে ছায়ার মতো থাকতে চায় তা আর তোমার সামনে প্রকাশ করতে চায় না। কারণ কষ্টকে সে এখন খুব বেশি ভয় পায়, ভয় পায় অবহেলা কে, তোমার সেই তাচ্ছিল্য কে। একটু লক্ষ্য করলেই দেখবে তোমার বাড়ির কুকুরকে বা বিড়ালকে নিয়মিত তাড়িয়ে দেখো, কুকুর / বিড়ালও তোমার এলাকা ছেড়ে পালাবে আর সেখানে তো আমরা মানুষ। অবহেলা কেউই সহ্য করতে পারে না। সেই এলাকা ছেড়ে যাওয়া কুকুর বা বিড়ালকে আবার একটু ডেকে দেখো সে আগেই মতোই আছে, আগের মতোই তোমার ভক্ত। মানুষও তেমনই যে সত্তিকার অর্থেই তোমাকে চায় তাকে শত অবহেলা করার পরো একটা সময় ডাকলে ঠিকই রাগ, অভিমান, কষ্ট ভুলে চলে আসে। এটাই ভালোবাসা, এটাই মায়া।

কেউ তোমার সাথে ভালো ব্যবহার করলে বিনিময়ে সেও তোমার ভালো ব্যবহার আশা করে। যে তোমার খোঁজ রাখে সেও চায় তুমি তার একটু হলেও খোঁজ রাখো,  মনে রাখো। বিনা স্বার্থে মানুষ হয় না, বিনা স্বার্থে মন হয় না।। যে তোমার নিয়মিত খোঁজ রাখে, তোমার কেয়ার করে, বিনিময়ে সেও একটু হলেও চায় তুমি তার খোজ নাও। তারো তোঁ ইচ্ছে করে কেউ তার খোঁজ রাখুক, কেয়ার করুক, হুংকার শুরে শাসন করুক। এগুলোকে স্বার্থ বলে না, এগুলো হলো মনের খুরাক। যে তোমার একদিন হলেও উপকার করেছে তাকে কখনো ভুলে যেও না, সে শত্রু হলেও তার কাছে তুমি কিন্ত ঋণী। কাউকে অবহেলা না করে ভালোবাসতে শিখো এতে নিজেকে ছোট করা হয় না বরং নিজের ব্যক্তিত্ব প্রকাশ পায়।।"

যে কোন সম্পর্ক জীবনের বৈচিত্র্যময় আনন্দকে, সময়কে চিনতে সাহায্য করে। প্রিয় কারো সঙ্গে  কাটানো সময় স্মৃতিকে পরিপূর্ণ করে, মনকে পূর্ণ করে। এই প্রিয় থেকেই জীবনে কখনো কখনো একাকীত্ব হয়ে উঠে। একাকীত্ব মানুষকে এমন অভিজ্ঞতা দেয়, যা অন্য কোনোভাবে অনুবাধন করা সম্ভব নয়। 

একাকীত্ব জিনিসটা হঠাৎ করেই আসে না। একটা কিছুর প্রতি সীমাহীন মায়া বাড়তে বাড়তে সে জিনিসটার শূন্যতা মনে একাকীত্বর সৃষ্টি করে। মায়াও কিন্তু এক দিনেই জন্ম নেয় না। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস মনে লালন করতে হয়, মনে স্থান দিতে হয়, মনে অনুভব করতে হয়। তবে মনে মায়ার জন্ম নেয়। কোন জিনিসের মায়া খুব সহজেই কাটিয়ে উঠা যায় কিন্তু মানুষের প্রতি মায়া কখনোই কাটিয়ে উঠা যায় না। মায়া একটু একটু করে বাড়তেই থাকে। একটা সময় অপর পাশের মানুষটি যখন মায়ার বাঁধন ছেড়ে বের হতে চায় তখন এ পাশের মানুষটির মায়ায় সুতোয় টান পড়ে। একটি সময় এ পাশের মানুষটি পরিপূর্ণ ভাবেই একা অনুভব করে। ধীরে ধীরে কষ্ট পুষতে পুষতে একদিন এ পাশের মানুষের মনে জায়গা করেই ফেলে এই একাকীত্বতা। একাকীত্ব অবশেষে তাকে ঘিরেই ফেলে,বন্দী করে নেয় তার জালে। সে চাইলেই সে জালটা ছিড়তে পারে না, বের হতে পারেনা সেই জালের থেকে। চাইলেই পারে না মুক্ত হতে, চাইলেই পারে না তার সাথে কাটানো সময় গুলো মন থেকে মুছে ফেলতে, মুছে ফেলতে পারে না তার সাথে প্রতিটা দুষ্ট - মিষ্ট স্মৃতি !! এগুলো মনে কাটা দেয়, প্রতিটা সময় অনুভব করায় তার সেই সময় গুলো, সেই কথা গুলো। একাকীত্বে ভাসায় তার সব কিছু, সব অনুভূতি গুলোকে। 

এই একাকীত্ব আরোও দৃড় হয়ে উঠে যদি সেই মানুষকে একাকীত্ব থেকে বের হওয়ার জন্য কেউ পাশে না থাকে,তার সহযোগী হয়ে না উঠে,তাকে সাহায্য না করে। একমাত্র সে মানুষটাই বোঝে একা থাকা কত কষ্টের, কত নির্মম, কত যন্ত্রণা।।

দিনদিন সে সবার থেকে আলাদা হতে থাকে, একটা সময় চলে যায় সবার থেকে দূরে। এতটাই দূরে যে আর আসে না ফিরে। সে তো জানে এটা কত ব্যাথার,কত আক্ষেপের, কত নির্ঘুম রাতের সাক্ষী তার সেই একাকীত্বতা। তিল তিল করে সে পুড়ে যন্ত্রণায়, পায় না কাউকে সে সহায়তায়।।কেউ বোঝে না তার হারিয়ে যাওয়া অস্তিত্ব, দেখে না তার হাসির আড়ালে কান্নাটা...!!

এমন সময় কারো হাত প্রয়োজন,প্রয়োজন কারো সহায়তা, দরকার ভালোবাসার, যে ভালবাসা দূর করতে পারে তার একাকীত্বতা। যে ভালবাসা তাকে বাঁচতে শেখাবে, শেখাবে তাকে নতুন করে পথ চলার, দেখাবে নতুন আশার আলো আর দূর করবে তার একাকীত্বতা। কিন্তু দুঃখের বিষয় সে ঐ মানুষটাকেই পাশে চায় যার জন্য সে একা হলো, যার জন্য তার আজকের এই একাকীত্ব। কিন্তু তাই কি আর হয়...!!! যে মায়ার সুততে একবার টান পড়েছে, সেই সুতো কি আর মায়ায় ফেরে...!!! 

MARI themes

Powered by Blogger.