যোগ্যতা প্রমানের খেলায় আমি ক্লান্ত। ভালো স্কুল, ক্লাসে দশের মধ্যে থাকো, ভালো কলেজে পড়ো, গোল্ডেন পাও, ভালো ভার্সিটি, ভালো সাবজেক্ট, অনার্স তো সবাই পড়ে আরো পড়ো আরো পড়ো, CA-পড়ো ভালো বেতন পাবে,  CMA, CFA, CPA- করতে পারলে তো কথাই নেই, পারলে  Merchandising-এ Join-করো দেখবা টাকা আর টাকা। পড়তে পড়তে  ভাবো বিদেশ যাবে নাকি দেশে সরকারি চাকরি করবে, ভেবে প্রিপারেশন নেয়া শুরু করো। বিদেশ গেলে আরো পড়ো, নতুন জীবন নতুন জায়গা নতুন সংগ্রাম। দেশে থাকলে নিয়োগের গ্যাড়াকলে পৃথিবীর সব বিষয়ে জ্ঞানী হতে হতে বুড়ো হও। একদিন অফিসার হয়ে যাবা মুখে কুলুপ এটে যাবতীয় সব সুবিধা পাবা, বেসরকারি চাকরিতে পয়সা আছে স্বাধীনতা আছে দুই দিন পর পর সিভি রেডি করো কোম্পানী শিফট করো বেতন বাড়াও প্রতিদিন নিজেকে প্রমান করো নাহলে ব্যাকডেটেড হয়ে বাদ পড়ে যাও। এভাবেই ছুটে বেড়াও যোগ্যতার পরিধি আরও বড় করতে, জীবনে বড় কিছু করতে হলে ছুটতে হবে, অনেক ছুটতে হবে। 

জীবনে যে রঙ টুকু দিয়ে আঁকা স্বপ্ন ছিল, যোগ্যতার পিছনে ছুটতে গিয়ে আজ তার সবই ধূলোয় মিশে একাকার। সেই সপ্ন গুলো আর স্বপ্ন হয়ে আমার চোখে আসে না। আলো আঁধারের জীবনে হারিয়ে গেছে জীবনের আলো। সেই যে শুরু এই শহরের সাথে যোগ্যতার প্রমাণ দেওয়া, সেই সাথে হারিয়ে ফেলা নিজের অস্তিত্ব। আস্তে আস্তে ডুবে যাওয়া মিথ্যে হাসির হাঁসি হেসে নিজেকে সজাক রাখা। হারিয়ে গিয়েছে ঠোঁটের কোণে সেই হাসি টা। স্বপ্নের পিছনে ছুটতে গিয়ে নিজেকেই অনেকটা হারিয়ে ফেলেছি। খুব গোপনে আমি দুঃখে ভাসি, ভিতরটা অন্য রকম এক শুন্যতা। মনের কথা, স্বপ্ন, আশা গুলো মনে জমা রয়ে যায়। যে চোখ ছিল সরল-সহজ, সেই চোখের ভাষা হারিয়ে জমেছে কঠিন নীরবতা। হারানোর শেষ সীমানায় এসে আজ বেঁচে থাকার আশাটা হারিয়ে ফেলেছি। সব ছেড়ে লুকাতে ব্যস্ত নিজেকে, চলে যেতে হয় অজানা প্রান্তে।

এমন জীবনের স্বপ্ন তো আমি দেখি নাই মা...! আমি তো একটু আমার মতো বাঁচতে চেয়েছিলাম। একটু মাটি হাতাবো, একটু গাছে চড়বো, একটু ঘাসে বিশ্রাম নিবো, পুকুরে সাতার কাটবো। আমার তো দু'টো ডাল-ভাতেই হয়ে যায়। এই বার্গার, পাস্তা, এসি, ফ্রিজ, ফ্ল্যাট, গাড়ি, ইট কাঠ পাথরে আমাকে কখন জড়ালে...? এতো মানুষকে আমি কেনো চিনলাম, এতো আঙ্গুল কেনো আমার দিকে...? যেখানে মানুষের চেয়ে মানুষ মানুষের যোগ্যতাকে বেশি ভালোবাসে। 

মৃত্যু কি পারবে আমাকে তোমাদের হাত থেকে মুক্তি দিতে? আমি তোমাদের সাফল্যের হাত থেকে আমার জীবন ভিক্ষা চাই। তোমাদের সমালোচনার হাত থেকে আমার শুদ্ধ নিশ্বাস ভিক্ষা চাই। আমি তোমাদের সবার থেকে দূরে, সবার চিন্তা বাদ দিয়ে একটু বেঁচে থাকতে চাই। এ সমাজ আমাকে বাঁচতে দিবেনা প্রতিজ্ঞা করেছে... আমি তোমাদের সবার মতো বেঁচে থাকার প্রতিজ্ঞা করতে পারছিনা।

যোগ্যতা প্রমানের খেলায় আমি ক্লান্ত। এ জীবনের স্বপ্ন আমি কোনদিন দেখিনি, কখনোই না...।

ছোটবেলায় অনেক কিছু করতে চাইতাম, পারলে সব করতে চাইতাম। কেবল স্কুলের কোন বিষয়ে কিছু লিখতে বললেই দুনিয়া উল্টে ফেলতাম। লেখার প্রতি কেমন যেন এক চরম বিতৃষ্ণা ছিল সেসময়। কেন এরকম ছিল সেটা সত্যিই আমার জানা নেই। পেনসিল দিলে কলম দিয়ে লিখতে চাইতাম আর কলম দিলে পেন্সিল দিয়ে। পেন্সিল ধরলেই ইঁদুরের মতো শুরু করতাম কামড়ানো। খাতা ভরে আকাআকি করতাম, তবু লিখব না কিছুতেই।

এখন ভাবলেও হাসি পায়। এখন তো লেখা ছাড়া নিজেকে কল্পনাও করতে পারি না। ডান হাতটা একটু ব্যাথা করলে বা কাটলেও রাগ লাগে যদি ল্যাপটপ এর কীবোর্ড ধরতে না পারি। আমার এই ভার্চুয়াল লিখাবন্ধু আমায় কোনো দিন ধোঁকা দেয় না যে...! যেকোনো হাসি–কান্না, ভাল-খারাপ লাগার অনুভুতি, জীবনে যা কিছুই ঘটুক, সব কিছুতে এই ভার্চুয়াল কাগজ–কলম আমার সব সময়ের সঙ্গী।

কেন লিখি...!! প্রশ্নটা একটু বেশ কঠিন আমার কাছে। যেমন কেউ যখন  জিজ্ঞেস করলো- কেমন আছেন...? এর উত্তর দায়সারা ভাবে দিলেও সত্যিকার অর্থে কি দিতে পারি...? আসলেই পারা যায় না। প্রতিদিন আমরা এরকম প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছি আর নিজেকে প্রশ্ন করছি। এমন তাগিদ বোধ থেকে বলা খুব মুশকিল কেন লিখি। নিজেকে প্রশ্ন করার মতো বলি- "লিখি নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য, নিজের মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য, জীবনের প্রতিটা ধাপ-সময় কোন এক জায়গায় লিপিবদ্ধ করে রাখার জন্য, জীবনকে কিছুটা বোঝার জন্য, জীবনের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি গুলো পাঠককে বিলিয়ে দিয়ে নিজেকে মিলিয়ে নেয়া। লেখাকে আনন্দ-দুঃখ সমান ভাবে উপলব্ধি করি। আমার অনুভূতি প্রকাশ না করতে পারলে কষ্ট পাই, সেই প্রকাশের মাধ্যম টাই এই আবোল-তাবোল, অগোছালো কিছু লেখা-লেখি। খুব প্রিয় মানুষটির সাথেও হয়তো মন নিংড়ানো সব কথা বলা যায় না। কথা বলার সময় নিজের সবটা সঠিক ভাবে প্রকাশ করতে যতোটা না কষ্ট হয় তারচেয়ে বেশি কষ্ট হয় পরবর্তীতে কথা গুলোর ভুল ব্যাখ্যা শুনে। কারো কাছে নিজের খারাপ লাগার সময়টা শেয়ার করে পরবর্তীতে সেই খারাপ সময়ের ভুল ব্যাখ্যার সাথে তীর ছোড়া কথা বেশি কষ্ট দেয়, স্তব্ধ করে দেয়। এটা ভাবতে বাধ্য করে-"নিজের কথা গুলোকে, নিজের মনের ভাবটাকে নিজের মাঝে ধামা চাপা দিলেই হয়তো ভালো হতো।"  অর্জিত অভিজ্ঞতা আর অপারগতা এই লেখার মধ্য দিয়েই প্রকাশ করি।

আগে প্রতিদিনের কোনো একটা সময় বের করে ফেলতাম কাজের ফাঁকে। বর্তমান ব্যস্ততা আমাকে এতটাই আচ্ছন্ন করে রেখেছে যে, চাইলেও মনমতো পর্যাপ্ত সময় নিয়ে পড়তে পারি না, মনের ভাবটা প্রকাশ করতে পারি না। লিখতে পারি না অনেক কিছুই। ব্যক্তিগত লাইব্রেরির দিকে তাকালে শুধু আক্ষেপ হয়, হায়, কত পড়া বাকি এখনও!

‘মানুষের চেয়ে কাগজের, লেখার ধৈর্য বেশি’। এর সঙ্গে নিজের কথা যোগ করে বলি, কাগজ - লেখাকে হয়তো মানুষের চেয়ে বিশ্বাসও করা যায় বেশি।


জানি,পৃথিবীর সব কোলাহল ছেড়ে-
একদিন চলেই যাবো দূর বহুদূরে,
ফিরে আর আসা হবে না,
প্রাণ খুলে আর হাসা হবে না,
নিঃশেষ হয়ে যাবে এই অস্তিত্ব চিরতরে।
একদিন চলেই যাবো সবকিছু ছেড়ে।

কেউ যাবে না আমার সাথে-
আমি একাই চলে যাবো একদিন,
তুমি সমস্ত পৃথিবী জুড়েও খুঁজে পাবে না,
হয়তো ভুলে যাবে কয়েক মিনিট বা কিছু দিন পর। 
আমি রেখে যাবো কিছু স্মৃতি তোমার জন্য-
ভাবতে পারো আমার অসমাপ্ত ভালোবাসা এটা,
আমি থাকবো না তবুও-
আমার স্পর্শ টুকু অনুভব করে নিও , 
জানি না সেদিনও কি আমার এই ভালোবাসা টুকু-
অবহেলিত থাকবে তোমার কাছে ...!!?? 

জানি, সেদিন আমায় কেউ রাখবে না মনে-
ভুলে যাবে আমার কথা খুব গোপণে।
দূর হতে দেখবো সেদিন অলক্ষ্যে দাঁড়িয়ে
বর্ণিল স্মৃতি গুলো গেছে অতীতে হারিয়ে।
ব্যস্তময় নির্মম বাস্তবতার ভীড়ে
জানি, হারিয়ে যাবো আমি চিরতরে।

হয়তো, থাকবো না সেদিন প্রিয় কোন বন্ধুদের আড্ডায়
কিংবা স্বজনদের পারিবারিক আলাপচারিতায়,
বা তোমার আনমনে ভাবনায়-
হয়তো, আমার ছবি দেয়ালের কোণে পাবে শোভা,
বছর পার হতেই বড়জোর একটা স্মরণ সভা।
তারপর, আমি আর নেই তোমাদের ভীড়ে
হারিয়ে যাবো মন থেকে চিরতরে।

অধরা স্বপ্নটা বুকে নিয়েই-
আমি হারিয়ে যাবো চিরতরে...।। 

আচ্ছা একটা মানুষের সবচেয়ে নোংরা অভ্যাস কি..? আমার মতে ইগো, জেদ।কোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইগো ঋণাত্মক প্রভাবক হিসাবে কাজ করে, কখনোই ভালো কিছু নিয়ে আসবে না । যতবেশি ইগো থাকবে ততবেশি সম্পর্ক খারাপ হবে এতা প্রমাণিত।

ধরুন, আপনারা দু'জন দু'জনকে ভালোবাসেন। কিন্তু কোনো কারণে একে অপেরের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন কেউ কাউকে স্যরি বলতে রাজি না।
এখন দু'জনেরই প্রশ্ন হলো:-
আমি কেন আগে কথা বলবো !? আমাকেই কেন প্রতিবার স্যরি বলতে হবে, সম্পর্কটাকে এগিয়ে নিতে হবে...? অর্থাৎ, আপনাদের মাঝে তৃতীয় জন হিসাবে ইগো, জেদ প্রবেশ করলো। সম্পর্কের চেয়ে ইগো অনেক বেসি দামি হয়ে গেলো। আপনি সম্পর্ক টাকে যতোটা না ভালোবাসেন তার চেয়ে বেশি ভালোবাসেন আপনার জেদ আর ইগো কে।

আচ্ছা আসলেই কি ইগো দামি, কতোটা দামি...?
তাহলে আপনার ফেসবুকের সার্চলিষ্টের প্রথমে প্রিয় মানুষটার আইডি কেন...? কেন বার বার চেক করা হয় ঐ আইডিটা...? কেনই বা রাত নামলে আপনাদের আত্মার তীব্র আর্তনাদ শুনা যায়...? কেনই বা বারবার চেক করেন সে কোন পোস্ট করেছে কিনা...? এসকল প্রশ্নের কোনো উত্তর আছে আপনার কাছে...? থাকবে বা কি করে আপনারা তো দুই'জন দুইজনকে সবসময় নিজেকে সুখী ও ব্যস্তময় আছেন দেখানোর নোংরা প্রতিযোগিতায় লিপ্ত, ভালো আছেন এটা দেখাতে ব্যস্ত। দু'জনেই এমন ভাব দেখাচ্ছেন যেন দু'জনেই অনেক ভাল আছেন। আসলে কতোটা ভালো আছেন তা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের চোখের দিকে তাকিয়ে চোখ কে জিজ্ঞাস করুন।ইগো দেখিয়ে কথা না বলাটা কোনো স্মার্টনেস না। ইগোপ্রবণ মানুষরা অনেক সময় সেল্প রেসপেক্ট ব্যাপারটিকেও ইগোর সাথে মিলিয়ে ফেলে। 

একটা সম্পর্ক তৈরি করা কিন্তু খুব একটা কঠিন না। কঠিন কিন্তু এতো টাও না যতটা কঠিন ঐ সম্পর্কটাকে অটুট রাখা, টিকিয়ে দুইজন সুখে থাকা। ঝগড়া করে কথা বন্ধ রেখে আসলে কি হয় ! দূরত্ব বেড়ে যায় নিজেদের মাঝে, একটা সময় সেই দূরত্ব পাহাড় সমান হয়ে দু'টি পথ দু'দিকে চলে যায়। টিকিয়ে রাখার যদি ইচ্ছেই থাকে, যদি সত্যি তার জন্য ভালোবাসা থেকেই থাকে ,একজন না একজন ঠিকই দুইদিন পরে গিয়ে সরি বলে। ইগো ভেঙ্গে সরি যেহেতু বলবেনই, তাহলে ২ দিন কথা বন্ধ রাখার কিছু আছে ? ভাবুন তো একবার...

ইগো দেখিয়ে যে মানুষটার সাথে দূরে সরে আছেন সেই মানুষটার ভালো দিক যেমন আপনাকে আনন্দ দিয়েছে, খারাপ দিক আপনাকে কষ্ট দিবে - এটাই স্বাভাবিক। আপনি ভালো দিক, ভালো ব্যবহার মেনে নিবেন কিন্তু খারাপ কিছুই মানতে পারবে না তা তো হয় না। হাতের পাঁচ আঙ্গুল কখনোই সমান হয় না, তেমনি একটা মানুষের বর্তমান পরিস্থিতি, মনের অবস্থা এক হয়না। যে মানুষটার কথায়, ব্যবহারে আপনাকে কাঁদাচ্ছে, যার কথায় আজ চোখে জ্বল চলে আসছে, যার ব্যবহারে তাকে আজ ঘৃণার চোখে দেখছেন ভেবে দেখেন তার জন্য আপনি জীবনের অনেক কঠিন কঠিন সময়ে হেসেছেন, সে আপনাকে হাসিয়েছে, মানসিক ভাবে সাপোর্ট দিয়েছে। ভেবে দেখেন এই মানুষটা আর সেই মানুষটা একই মানুষ কিন্তু আপনি তার বর্তমান অবস্থা, মনের পরিস্থিতি না বুঝে তার থেকে দূরে সয়ে ঠিকি গিয়েছেন, আপনি ইগো টাকেই বড় করে দেখেছেন। কখনো হয়তো এটা বুঝতে চাননি এই মানুষটার হয়তো এখন সময় খারাপ যাচ্ছে, হয়তো সে অনেক বাজে পরিস্থিতিতে আছে। বুঝতে চাননি তার পাশে আপনার এখন থাকাটা বেশি প্রয়োজন, তাকে একটু মানুষিক ভাবে সাপোর্ট দেওয়া আপানার দরকার। এগুলো কিছুই না করে রাগের মাঝে তার কথা গুলো শুনে ঠিকই আপনি তার জীবন থেকে সরে গিয়েছেন। আপনার ভাষ্য মতে এটা কে কি ভালোবাসা বলে...?

আপনাকে বুঝতে হবে, রাগ-ঝগড়া-কথা কাটাকাটি ছাড়া কখনো কোনো সম্পর্ক হয় না। এটা সম্পর্কের একটা অংশ। কিন্তু, আপনি যাকে ভালোবাসেন বা আপনাকে যে ভালোবাসে তার সাথে সামান্য ঝগড়াতেই সম্পর্ক শেষ করে দেওয়ার সিধান্ত নিয়েছেন। তবে এটা ধরে নিন আপনি যাকে ভালোবাসেন তার চেয়ে আপনার ইগো, জেদ, আত্মসম্মান বোধ টাই বড়। সে আপনার জীবনে থাকুক বা না থাকুক তাতে আপনার কিছু আসে যায় না।

সবসময় নিজের দিক ভাবলেও চলে না। অনেক সময় অপর পাশের মানুষটির কথাও ভাবতে হয়। আপনি যে মানুষটার সাথে জড়িয়ে আছেন সে মানুষটার উপর আপনার যেমন অধিকার আছে তার যেকোন বিষয়ে কথা বলার, ঠিক তেমনি আপনার বিষয়েও কথা বলার অধিকার সে রাখে। যদি আপনি ভেবেই থাকেন আপনার সব কিছুর সিধান্ত আপনি একা নিজে আর আপনার বাবা-মা নিবে তাহলে আপনার ভাবা উচিত আপনার সাথে আরেকটা মানুষ জড়িত। তার কথাও আপনাকে ভাবতে হবে, আপনাকে ভাবতে হবে তারও কোন সিন্ধান্ত দেওয়ার থাকতে পারে আপনাকে নিয়ে। সে চাইতেই পারে আপনার সবচেয়ে কাছের মানুষটি যেন সে হয়, আপনার কোন বিপদে সেই যেন সবার আগে উপস্থিত হতে পারে, সে চাইতেই পারে আপনাকে চোখের আড়াল না করতে। আপনি সর্বদাই চাইবেন জিততে, সর্বদাই চাইবেন আপনি সবসময় আপনার সিদ্ধান্তটাই উর্ধ্বে থাকতে। আপনাকে সে কিচ্ছুটি বলতে পারবে না, কিন্তু কেনো..? 

ভালোবাসার সম্পর্ক হোক বা অন্য কিছু ইগোকে কখনোই প্রশয় দিতে নেই। দেখবেন আপনার সাময়িক ইগো, জেদ এর জন্য তার জীবনের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। তখন তার কাছে ফিরে এসেও তাকে আগের মতো হয়তো পাবেন না।

কি হবে প্রিয় মানুষটার কাছে নিজের পার্সোনালিটি লস করলে ?  এর জন্য আপনার আত্মসম্মান কমবে না বরং বাড়বে। আমার তোমাকে ছাড়াও চলবে এই চিন্তা না করে বরং এই চিন্তাকে গলা টিপে হত্যা করে বাক্সবন্ধি করে পানিতে ভাসিয়ে দিন, যদি তার সাথেই থাকতে চান, তাকে মন থেকে আসলেই ভালোবেসে থাকেন। কোনো কিছুকে নেগেটিভভাবে না নিয়ে পজিটিভভাবে নিন। দেখবেন আপনার জীবন শান্তিতে ভরপুর, সাথে আপনার প্রিয় মানুষটিরও।

তোমাকে দেবার মতো আমার তেমন কিছু নেই-
যা কিছু আছে তা অতি নগন্য...!!
তবু চাইলেই দিতে পারি তোমায়-
দু'আঙুলে জড়ানো প্রেম, মুঠো ভর্তি স্বপ্ন-
আর সুপ্ত কিছু অনুভূতি।

তোমাকে দেয়ার মতো আমার বেশী কিছু নেই,
আছে তোমাকে নিয়ে আমার কিছু অসমাপ্ত কবিতা-
যার নাম দেওয়া হয়নি আজো-
নীল চিরকুটে তোমায় ভেবে লেখা আমার অব্যক্ত কথা,
কিছু দুপুর ভর্তি নিরবতা।

তোমাকে দেয়ার মত আমার তেমন কিছু নেই,
নেই তোমাকে নিয়ে Mercedes বা Audi- তে করে এখানে সেখানে ঘুড়ে বেরানোর মতো প্রাচুর্য,
আমি হয়তো তোমার জন্য এতটুকুই পারবো,
আমার কোলে মাথা রেখে দশ টাকার বাদাম আর নুনে তোমায় প্রতিটা সূর্য অস্ত দেখাতে,
চাদনি পসর রাতে পাশাপাশি হেঁটে লুটোপুটি জ্যোৎস্নায় ভিজতে।
সাথে দু'পাতা টিপ, এক লাঠি কাজল, কিছু চুল বন্ধনী
কয়েক ডজন নীল চুড়ি, একটা নীল শাড়ি আর
ছোট্ট একখানা কুঁড়োঘরে শুয়ে আমার বুকের পাটাতনে
বিছানা পেতে
তোমায় সুখেরী এক নির্ঘুম নগরীতে পৌঁছে দিতে।

তোমাকে দেয়ার মত আমার কিছু নেই,
বিলাসিতার চাদরে লুকানোর মতো অট্টালিকা।
আমি হয়তো পারবো-
কোন এক ঝুম বৃষ্টিতে এক গুচ্ছ কদম ফুল নিয়ে তোমার সামনে দাঁড়াতে,
নিজ হাতে তোমার পায়ে পায়েল পড়িয়ে দিতে-
তারপর কিছুটা সময় পাশাপাশি ভিজে বৃষ্টি বিলাস করতে।

দেখো, তোমাকে দেয়ার মতো আমার যে এর থেকে বেশী কিছু নেই,
যা কিছু আছে অতি নগন্য!
তবু চাইলেই আমাকে দিয়ে দেবো তোমায়।

ডিপ্রেশন নাকি মন খারাপ, এটা আমাদের অনেকের কাছেই একটা বড় ধাঁধা। অনেকসময়ই আমরা বুঝে উঠতে পারিনা আমাদের মনের আসল অসুখটা ঠিক কী? রেজাল্ট খারাপ বা খেলতে গিয়ে ম্যাচ হেরে যাওয়ার দুঃখ কিন্তু ডিপ্রেশন নয়। বহুদিন ধরে পারিপার্শিক অনেক কঠিন অবস্থার সঙ্গে ঝুলতে ঝুলতে, নিজেকে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ি আমরা অনেকেই। আর এখান থেকেই শুরু হয় যাবতীয় সমস্যা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, অতীতের অনেক না পাওয়া বা হেরে যাওয়া বা আশানুরূপ ভবিষ্যৎ সামনে ধরা দিবে কিনা এই চিন্তা গুলোই আমাদের ডিপ্রেশনের জন্য অনেকাংশে দায়ী। আর এই দৈনন্দিন সমস্যা গুলি আমাদের মাঝে একটু একটু করে জমতে থাকে, জমতে জমতে একটা সময় ঘোরের মধ্যে চলে যাই; যেখান থেকে আর কাটিয়ে উঠতে পারি না।

ডিপ্রেশন নেই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। প্রতিটা মানুষ কোন না কোন এক জায়গায় অসম্পূর্ণ, যেখান থেকেই ডিপ্রেশন এর জন্ম।যার হয়তো টাকা নেই তার টাকার জন্য, যার টাকা আছে কিন্তু মনের সুখ নেই, তার মনের সুখের জন্য। যার বাবা - মা নেই তার বাবা মায়ের জন্য, আবার যার বিয়ের ১৫/২০ বছরেও সন্তান হয়নি তার সন্তানের জন্য। বেকার ছেলেটির চাকরির জন্য, কখনো বা নিজের প্রিয়তমার বিয়ে হয়ে যাবে নিজের যোগ্যতার কমতির জন্য। বিয়ে উপযুক্ত মেয়েটির ভালো একটা চাকরী কিংবা ভালো একজন স্বামীর জন্য। আবার একই ছাদের নিচে বছরের পর বছর বাস করে কেউ কাউকে না বোঝার জন্য, কখনো বা পরিবারের কাছে থেকেও মনে হওয়া হাজার মাইল দূরে।

ডিপ্রেশন কখনো এক প্রকারের হয় না, যার যেটা নেই তার সেটার জন্যই ডিপ্রেশন! প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌড়ের তাল মেলাতে গিয়ে আমরা প্রত্যেকেই হাঁফিয়ে উঠি একটা সময়ের পর। আমাদের পারিপার্শিক সমাজ যত আধুনিক হচ্ছে, প্রতিযোগিতাও ততই বাড়চ্ছে এবং পাল্লা দিয়ে বাড়চ্ছে আমাদের মানসিক সমস্যা গুলিও, এবং বেড়েও যাচ্ছে। 

শুধুমাত্র ভালোবেসে হারিয়ে ফেললেই ডিপ্রেশন হয়না। কোন একটা ছেলে বা মেয়ে মানসিক যন্ত্রণার মাঝ দিয়ে যাচ্ছে, স্বাভাবিক ভাবেই আমরা ধরে নেই, ছেলেটি কিংবা মেয়েটি প্রেমে ব্যর্থ হয়ে ডিপ্রেশনে আছে। এটা ঠিক প্রকারভেদে হয়তো এইটা বেশি হয়ে থাকে তার মানে এই নয় সবাইকে একই পাল্লায় মাপতে হবে! শুধুমাত্র প্রেমের জন্য নয় অনেক কারণেই মানুষ ডিপ্রেশনে ভুগে।

আমি নিজের কথা বলতে পারি,ব্যক্তি জীবনে আল্লাহ্‌ আমাকে সব দিয়েছেন, কোনকিছুর অভাব রাখেন নাই। ভালো জীবন বলতে যা যা কিছু লাগে সবকিছুই আমি পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু আমার কোন কিছুর অভাব না থাকাটাও হয়তো একটা অসম্পূর্ণতা। শুনতে হাস্যকর মনে হলেও এটাই সত্যি। তবে কিছু একটার অভাব যে রয়েছে সেটা খুব করেই অনুভব করি, যে অভাবটা অপূরণীয়। অভাবটা ভালোবাসার নয়তো...!? হতে পারে...

আমার মাঝে অকারণ মন খারাপের অভ্যাস আছে।আমি মাঝে মাঝে অকারণেই একা হয়ে যাই! সবকিছু থেকে তখন একা আড়ালে থাকতে ভালো লাগে।যেকোন আয়োজন, হৈচৈ, বেশি মানুষের আনাগোনা বিরক্ত লাগে। কারণ, এই সময় টা আমি নিজের মত করেই কাটাতে ভালোবাসি, তার জন্য একা থাকাটা তখন জরুরী হয়ে পড়ে।খুব যারা আপন, যাদের ছাড়া আমার চলেই না শুধু তাদের সাথেই কথা বলি, তবুও খুব কম। আমি জানি আমাকে যারা ভালোবাসে, তারা জানে আমি কেমন। তারা কখনো প্রশ্ন তুলেনা আমি কেন এমন হয়ে যাই। কারণ, তারা জানে আমি সময়টাকে নিজেই রিকোভার করতে পারবো। আর আবার আগের মতই হয়ে যাবো।তারজন্য আমার একটু সময়ের প্রয়োজন। যাই বলি না কেন,  সত্যিকারের  হাবুডুবু  খাচ্ছি প্রতিমুহূর্তের আশঙ্কায়। নিজেকে ভুলে যাওয়ার প্রবণতা আমাকে দিনে দিনে  আরো বেশি গ্রাস করে নিচ্ছে। ছোট্ট  ছোট্ট  তথ্য  অথবা প্রয়োজনীয়  কাজের  কথা ভুলে যাচ্ছি। আমি প্রয়োজনীয় কথা  বলা ও ভুলে যাচ্ছি। এটা কি ডিপ্রেশন ...!!! খুব কাছের মানুষ আমাকে দেখে ভাবে আমাকে কি যেন পাথর থেকে আরো পাথর  এর মতো নির্লিপ্ত করে তুলছে।  নিজেকে  অসুস্থ  মনে  হয়, কিন্তু ডাক্তার  পর্যন্ত দৌড়ানোর  আগ্রহ নেই।

শুধু একটাই ব্যাপার, এই সময়টা একজন প্রিয় মানুষের উপস্থিতি লাগে, যে সময়ে অসময়ে পাশে থাকবে। মানসিক সাপোর্ট দিবে, পরিস্থিতি বুঝতে চেষ্টা করবে।প্রতিটা মিনিট, ঘন্টা আমার কেয়ার নিতে ব্যস্ত থাকবে। সে কখনো আমায় ভুল বোঝবে না অহেতুক এই হঠাৎ মন খারাপের জন্য প্রশ্ন তুলবে না। মন খারাপের সময় বারবার মন খারাপের কারন জানতে চেয়ে আরও মন ভারী করে দিবে না। বরং আমার সময়টাকে রিকোভার করতে আপ্রাণ চেষ্টা করবে। বাস্তবতা ভিন্ন, বাস্তবতা কল্পনার মতো নয়। বাস্তবতা কঠিন, আমি কঠিনেরে ভালোবাসিলাম... 


চিঠি দিও, করুণা করে হলেও চিঠি দিও,
খামে ভরে তুলে দিও তোমার ভালোবাসার ছোঁয়ায় আঙ্গুলের মিহিন সেলাই
ভুল বানানেও লিখো প্রিয়, বেশি হলে কেটে ফেলো তবুও,
এটুকুই সামান্য দাবি, চিঠি দিও প্রিয়,
তোমার শাড়ির মতো-
অক্ষরের পাড়-বোনা একখানি চিঠি।

চুলের মতন কোনো চিহ্ন দিও বিস্ময় বোঝাতে যদি চাও...
বর্ণনা আলস্য লাগে তোমার চোখের মতো চিহ্ন কিছু দিও!
আজও তো অমন আমি চিঠি চাই, পথ চেয়ে আছি,
কোন এক পাখির ডানায় বেঁধে-
চিঠি দিও, বাড়ি পৌঁছে দেবে ....

এমন ব্যস্ততা যদি
একটি শব্দই শুধু লিখো, তোমার কুশল !
করুণা করে হলেও চিঠি দিও,
ভুলে গিয়ে ভুল করে একখানি চিঠি দিও খামে আমার ঠিকানায়-
কিছুই লেখার নেই তবু লিখো একটি পাখির নাম,
একটি ফুলের ছোট নাম,
টুকিটাকি হয়তো হারিয়ে গেছে
কিছু হয়তো পাওনি খুঁজে
সেইসব চুপচাপ কোন দুপুরবেলার গল্প
খুব মেঘ করে এলে কখনো কখনো বড় একা লাগে, তাই লিখো
করুণা করে হলেও চিঠি দিও, মিথ্যে করে হলেও বোলো, ভালোবাসি...!
মিথ্যে করে হলেও বোলো, ভালোবাসি...

বেঁচে থাকা আর বাঁচিয়ে রাখা দুটোর মধ্যে পার্থক্য বোঝ ? দু'টো কথা এক মনে হলেও একটু গভীর ভাবে ভাবলে এক নয়- একটা হল জীবন উপভোগ করা আর একটা হল জীবন উপভোগ করার আশায় বেঁচে থাকা। ওকে একটু বুঝিয়ে বলছি,
ধরো তোমার খুব ইচ্ছা কেউ তোমাকে তোমার মত ভালোবাসবে, তোমার মনের মতো কেউ আসবে জীবনে এবং সেই ইচ্ছায় বেঁচে আছো। এর মানে হলো আসলে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখছো।
আর ধরো, নিজেকে ভালোবেসে চমৎকার সময় কাটাচ্ছো, এর মানে হলো জীবন উপভোগ করছো। মানে বেঁচে আছো।
যারা নিজেকে বাঁচিয়ে রাখে তাদের জীবন কাটে আসলে একদিন বাঁচবো সেই আশায়। এক সময় বার্দ্ধক্য গ্রাস করে, তখন আক্ষেপ লুকিয়ে ভাগ্য কে দোষারোপ করে স্বস্তি নেবার চেষ্টা করে কিন্তু জীবন আসলে এমন না। বাঁচিয়ে রাখাটা জীবন না। ওটা জীবনের ঘানি টানা মাত্র।

জীবন হল একটা ম্যাজিক। এর থেকে অসাধারণ ম্যাজিক আর কিছুই নেই। অর্ধেক গ্লাসটা ভরা কিংবা খালি দেখাটাই হল ম্যাজিক। যদি মনে হয় গ্লাসের অর্ধেকটা তো ভরা ওতেই আমার পিপাসা মিটবে তবে জীবন সুন্দর আর যদি মনে হয় বাকিটা কেন ভরা না একদিন হয়তো ভরবে তবে যে অর্ধেক ভরা তার তৃপ্তিও মিলবে না। কতো অল্পতে তুমি সন্তুষ্ট সেটা নিজেকে বুঝাতে পারাটাই ভালো থাকা।

মাঝে মাঝেই অনেক ঘটনা আমাদের চমকে দেয়, এই যেমন পা হারিয়েও পর্বত জয়ী কোন মানুষ কিংবা ধর্ষণের স্বীকার হয়েও ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প অথবা সম্পূর্ণ শরীর অকেজ হয়েও মেধায় উত্তীর্ণ হওয়া কোন মানুষের গল্পগুলো দেখে মনে হয় আহা কি অসাধারণ এরা। কিন্তু সত্যিটা হল, এরা নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে নি, এরা বেঁচে থাকাটা বেঁছে নিয়েছে । বেঁচে থাকতে হবে এটাকেই বড় করে দেখেছে। 

তোমাকে কেন ভালোবাসে না এই প্রশ্ন নিজেকে করার আগে ভাবো তো তুমি নিজেকে ভালোবাসো ? পৃথিবীর সব চেয়ে সুন্দরী মেয়েটার হৃদয় বহুবার ভেঙেছে। আবার পৃথিবীর সব চেয়ে সুদর্শন ছেলেটা এখনো হৃদয় মিলিয়ে কাউকে পায়নি। তার হৃদয়ও অক্ষত নেই।কিন্তু তারা তো বেঁচে আছে । জীবন উপভোগ করছে, জীবনকে বাঁচিয়ে রেখেছে।
তারা ভালোবাসলে বলে দেয় , জানে হৃদয় ভাঙতেই পারে কিন্তু পাবার চান্স নেয় আর মেনেও নেয় যে হৃদয় হয়তো ভাঙবে। কিন্তু ভালোবাসাটা ভালোবাসা দিয়েই বেঁধে রাখে বেঁচে থাকতে চায়। হয়তো অনেক সময় পারে, অনেক সময় পারে না। তবু সময়ের প্রয়োজনে নিজের জীবনকে উপভোগ করা, বেঁচে থাকে, বাঁচিয়ে রাখে ।

শুধু ভালোবাসার ক্ষেত্রে নয়, খুব অল্প সময়ের জীবনে ইচ্ছা গুলো নিজের পূরণ করতে হয়, রিক্স নিতেই হয়, আর ব্যর্থতাও যে স্বাভাবিক, এটা মানতেও হয়। মেনে নেওয়াটা সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট।

ছোট্ট একটা জীবন, গত কালকেই তো স্কুলে গিয়েছিলে ব্যাগ নিয়ে, আজকে বয়স কত বেড়েছে , হঠাৎ একদিন দেখবে চুল সব সাদা হয়ে গিয়েছে। যাকে নিয়ে বেঁচে থাকতে চাইতে বা যার জন্য নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে চাইতে ঐ মানুষটি হয়তো তোমার আগেই ওপারে চলে গিয়েছে। তবু কিন্তু তুমি নিজে বেঁচে আছো, নিজেকে মানিয়ে নিয়ে দিন আগাচ্ছো।
আমরা কেউ থাকবো না পৃথিবীতে, অথচ রোজ বেঁচে না থেকে বাঁচিয়ে রাখছো , কি অপচয় এই জীবনের।
আক্ষেপ করার চেয়ে রিক্স নিয়েই বাঁচো , আর বেঁচে থাকাটা শিখে ফেল ।

আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে,
শুধু আমায় একটু মানসিক শান্তি দিলেই হবে!
যখন আমি তুচ্ছ বিষয়ে খুব রাগ করি,
সান্তনার পাহাড়ে ঘর ভরাতে হবে না তোমাকে!
শুধু যেন অনায়াসে জড়িয়ে ধরতে পারি তোমাকে খুব কষে!

আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে,
শুধু আমায় একটু সময় উপহার দিলেই হবে!
অফিসে যখন কাজের চাপে আমার নাস্তানাবুদ অবস্থা,
ফোনের লক স্ক্রিনে তোমার কয়েকটা মিস কল!
তখন শুধু একটি টেক্সটই যথেষ্ট, " মিস করছি? "

আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে,
বলছি না কারণে-অকারণে আমায় মনে করার কথা!
আমার যখন খুব দুঃখে মন ভেঙে যায়,
বন্ধু বিচ্ছেদ কিংবা মনের ঘরে ভীষণ যুদ্ধ চলে,
তখন না হয় তোমার কাঁধটা ভিজুক আমার চোখের জলে!

আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে,
বলছি না রোজ আমার সাথে ঘুরতে যেতে হবে!
বিকেলবেলায় আমি যখন ছাদে, সূর্য অস্তাচলে, হাতটি ধরে হাটবো দুজনায়, 
ভেসে যাবো মধুর প্রেমালাপে,
তখন না হয় সাজিয়ো তোমর খোঁপা বাগান ভরা লাল গোলাপে!

আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে,
আমি যখন প্রবল জ্বরে, ঘুম আসেনা পোড়া চোখে, 
এলোমেলো হয়ে যায় সবকিছু মনের শূন্য ঘরে,
তখন না হয় চুপটি মেরে বসে থেকো মাথার পাশে !

আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে,
আমার সব আবদারের ঝুলি তোমাকেই পূরণ করতে হবে!
সমস্ত পৃথিবী যখন একদিকে, মিথ্যা দোষারোপ এ ব্যস্ত সবাই,
আমার খুশি হাসি আনন্দ চঞ্চলতা সব যখন পতনের মূলে!
তখন শুধু চাই, তোমার ভরসার বাহুডোরে যেন থাকি খুব সুখে...

যদি আমাকে না পেলেও তোমার দিব্যি দিন কাটে,
সকালের নাস্তা হয়, তারপর দুপুরের খাবার,
রাতের খাবার শেষে-
ঘুমে আচ্ছন্ন হয় তোমার চোখের শহর,
তবে বুঝে নিও প্রিয়-
আমার জন্য কিছুই থেমে নেই তোমার।

যদি সামান্য জ্বরে ড্রয়ার থেকে খুঁজে বের করো থার্মোমিটার,
কতোটা জ্বর হলো-
মেপে দেখে নিজেই খেয়ে নাও জ্বরের ঔষধ,
তবে জেনে নিও প্রিয়-
আমার যত্নহীনতায় কিছুই যায় আসে না তোমার।

যদি মেঘলা দিনে বিষণ্ণ না লাগে,
বুকের ভিতর হাঁসফাঁস না হয়,
নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে নিঃসঙ্গ মানুষটি মনে না হয়,
তবে বুঝে নিও প্রিয়-
এক সাথে অনেক স্মৃতি জমলেও,
আমার জন্য ভালোবাসা জমে নি তোমার।

ভালোবাসলে এলোমেলো হতে হয়-
ভালোবাসাহীনতায় তারচেয়েও বেশি অগোছালো হতে হয়।
আমাকে না পেলেও যদি দিব্যি দিন কেটে যায়,
রুটিং মেনে সমস্ত জীবন কাটে,
গোছালো একটা ঘড় হয়!
তাহলে বুঝে নিও প্রিয়-
আমাকে যতোটা ভালোবেসেছিলে;
তারচেয়েও ভালোবেসেছ নিজেকে।

MARI themes

Powered by Blogger.