নিরর্থক


নিরর্থক সময় কাটানো, নিরর্থক শব্দ লেখা এই জীবনে আমার নতুন কিছু না। এমনটা হয় অনেক, হতেই থাকে… হচ্ছে অনেক দিন, হয়ত হবেও… আমার হয়ত নিয়তিই এমন। এই কথাটা লোকে যেভাবে বুঝবে, আমি তেমন করে লিখিনি। নিয়তি শব্দটা আমি বিশেষার্থে ব্যবহার করি। সেইটা সবার বোঝার দরকার নাই।

ব্যাখ্যাহীন, এক অনন্যসাধারণ যন্ত্রণা। আমি দেখতে দেখতে ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত। এই টেবিল, এই বইগুলো, এই জীবনের চিন্তা আর চাওয়াগুলো আমি সাজিয়ে রেখেছি অনেককাল ধরে। না পারি ভেঙ্গে ফেলতে, না পারি নতুন কিছু করতে। কারণ, নতুন কিছু সাজিয়ে রাখার স্থান নেই এখানে। আর, ভেঙ্গে ফেলতেও পারিনা। আমি তো ধ্বংস করতে শিখিনি। আমি তো গড়বো বলেই আজীবন দৃপ্ত প্রত্যয় করেছিলাম নিজের সাথে।

কল্পনার বিদঘুটে তেতো স্বাদের অনির্বচনীয় পংক্তিগুলো সরিয়ে আর কোন জায়াগাও পাচ্ছিনা যেখানে নতুন কিছু স্থান দিবো। অথচ, আমার সময় অফুরন্ত। কিছু করতেও পারছি না। আসলে ইচ্ছাও নেই। আমি এই শব্দহীন দৃশ্যপটের মাঝে খুঁজে চলেছি কী… আমি জানিনা।
মহাকাব্য...। সে আবার কী? আমার না-লেখা পংক্তিগুলো তো শত শত মহাকাব্যকে হার মানাবে, তাইনা...!!? আমার শব্দেরা বড়ই কৃপণ।  আমিও, না পেতে পেতে কৃপণতাই আমার পন্থা হয়ে গেছে। শব্দই বা কোথায়। সেই পুরোনো জীবনের নতুন পুনরাবৃত্তি। ঘিনঘিনে, কুতসিত, কদাকার, বিদঘুটে সব অনুভূতি আমার। ভালো অনুভূতি গুলোও আছে অনেক কিন্তু সে গুলো ক্ষণিকের তরে আমার কাছে এসে চিরতরে হারিয়ে গেছে। হারিয়ে গেছে বললে ভুল হবে, চলে গেছে।  আমি আমার মাঝেই বারবার প্রতিভাত হই।
আমি কি চেয়েছিলাম, তা ভুলে গেছি। চাওয়াকেও আমি বদলে দিয়েছিলাম। তার আদেশ মানতে। আমি তো আর পারিনি। আমি তো আর পারিনি কোন সত্যিকার পালাবদলের সম্ভাবনা আনতে। এই অন্ধকারের মাঝে আর কত রোমন্থন। এইসব বাক্যের কোন মানে নেই।

 কোথা থেকে আমার মাঝে আসবে আমার কাব্য প্রেরণা? আমি কেন এই শূণ্যতা, এই ফাঁপা আত্মা নিয়ে ঠকঠক ঠকঠক করে বেজে যাই, কেন ...???

জীবনটা আরেকটু সুন্দর হতে পারতো। আমারও হতে পারতো সুখময়, সাচ্ছন্দময় জীবন কিন্তু তা হয় নি। আমি আর শূণ্য দৃষ্টিতে কিছু দেখিনা। দেখলেও এই বিশালতা এমনই থাকবে, তা আর আমার মাঝে আসে না। আমি দিনদিন এমন জড় পদার্থ হয়ে যাচ্ছি কেন...? কেন এই নিঃসঙ্গতা ...??  অন্ধকার আর আলোর মাঝে যে কেবল দৃষ্টি শক্তিটুকুই আলাদা করে। আর কিছু না… একদম কিচ্ছু না। কোন প্রাণ তো নয়…