প্রতিদিন আমরা অসংখ্য মানুষের সঙ্গে দেখা করি, কথা বলি। কারো সঙ্গে অফিসে, কারো সঙ্গে পথে, আবার কারো সঙ্গে হয়তো হঠাৎ-ই ফ্লাইট বা কফিশপে। কিন্তু ভেবে দেখেছেন কি - এই এত মানুষের মধ্যে আসলে কয়জনের সঙ্গে আমাদের সত্যিকারের Connection গড়ে উঠে? কয়জনের সঙ্গে এমন সম্পর্ক গড়ে ওঠে যেটা হৃদয়ের ভেতর পৌঁছে যায়? আসলে আমরা চাইলেই সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে পারি না। কারণ সম্পর্ক মানে শুধু দেখা করা বা কথা বলা নয়। সম্পর্ক হলো এক ধরনের বোঝাপড়া, সময় দেওয়া, আন্তরিকতা, সহমর্মিতা আর পারস্পরিক সম্মানের সমন্বয়। চাইলেই এটা হঠাৎ করে কারো সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলা যায় না।

অনেকে ভাবে, “আমি তার সাথে দেখা করতে চাচ্ছি, কথা বলতে চাচ্ছি মানেই হলো বিপরীত পাশের মানুষও একই ভাবে কেন চাবে না !!!” কিন্তু বাস্তবতা একেবারেই এরকম নয়। একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে ধীরে ধীরে। সেখানে শুধু ইচ্ছা থাকলেই হয় না; সময় দিতে হয়, অপরজনকে বুঝতে হয়, তার অনুভূতিকে সম্মান করতে হয়। আপনি যদি শুধু নিজের দিক থেকে ভাবেন আর অপরজনের অবস্থাকে না বোঝেন, তাহলে সেই সম্পর্ক কখনো গভীর হয় না, সামনে আগায় না। তখন আপনি চাওয়া বা না চাওয়ার উপর কিছুই নির্ভর করে না। 

আমরা প্রায়ই একটা ভুল করি - যদি কেউ আমাদের সঙ্গে সময় কাটাতে চায় বা কেউ কফি এর জন্য ইনফাইট করল কিন্তু তাকে সময় না দিতে পারলে, আমরা ভাবি সে হয়তো মুডি বা Selfish বা Self-Centered Person. কিন্তু আসল ব্যাপারটা অন্য রকমও হতে পারে রাইট? মানুষটার হয়তো পারিবারিক সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বা অফিসের কাজের চাপ যাচ্ছে, বা অন্য কোনো Personal Situation-নিয়ে সে ব্যস্ত। কিন্তু আমরা সেটা না ভেবে ধরে নিই, “সে চাইছে না।” অথচ বাস্তবতা হলো- সে হয়তো পারছে না। আর এখানেই তৈরি হয় ভুল বোঝাবুঝি। দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের অনেক সঠিক ভাবে বুঝতে সহযোগিতা করে।

এই বিষয়টাই আরেকটু ভিন্নভাবে ভাবি, ভাবুন তো-যদি কেউ আপনাকে সরাসরি প্রশ্ন করে, “আমি কেন আপনার জন্য সময় দেবো?” তখন আপনার উত্তর কী হবে? আপনি কি সত্যিই তার সঙ্গে এমন কোনো Communication Build-up করেছেন, যে কারণে সে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আপনার সঙ্গে সময় কাটাতে চাইবে? যদি না করে থাকেন, তাহলে কেন সে আপনার জন্য সময় বের করবে? এখানে মূল কথাটা হলো- সম্পর্ক মানেই শুধু দেখা বা আড্ডা নয়। সম্পর্ক হলো বোঝাপড়া, Empathy, আন্তরিকতা আর একে অপরের অবস্থান বুঝে নেওয়ার চেষ্টার নাম।

এই বিষয়টা আমি নিজেও একবার গভীরভাবে বুঝতে পেরেছিলাম। মার্চ ২০২৫-এর শুরুতে আমি এক ব্যক্তিগত কাজে মালয়েশিয়ায় গিয়েছিলাম। যেহেতু একা ছিলাম, ছবি তোলার মতো কেউ ছিল না। তখন দেখি একজন চুপচাপ বসে আছে। আমি হালকা করে কথোপকথন শুরু করলাম। সে নিজেও খুব আগ্রহ দেখাল, ধীরে ধীরে আলাপ এগোতে লাগল। কথায় কথায় জানতে পারলাম তিনি জাপান থেকে এসেছেন, থাকবেন প্রায় ১৫ দিন। কাকতালীয়ভাবে তখন আমি Kaizen: The Japanese Method for Transforming Habits, One Small Step at a Time বইটা পড়ছিলাম জাপানি culture নিয়ে জানতে। সেটা শেয়ার করতেই তিনি খুব খুশি হলেন। প্রায় ৩০ মিনিট আমরা আলাপ করলাম। শেষে তিনি আমাকে জাপানে আসার আমন্ত্রণ জানালেন, আমি তাকে coffee-এর জন্য invite করলাম। আরও অবাক হলাম যখন তিনি নিজেই বললেন, চাইলে আমি আপনার ছবি তুলে দিতে পারি। সেই মুহূর্তে বুঝলাম - এই Approach, এই Openness না থাকলে কোনো সম্পর্কই তৈরি হতো না। এখনো তার সাথে যোগাযোগ আছে, কথা হয়। যদি কোনোদিন জাপান যাই, অবশ্যই তার সঙ্গে দেখা করবো।

এই অভিজ্ঞতা আমাকে শিখিয়েছে - কেউ আপনার জন্য সময় দেবে, সেটা কখনোই একদিনে হয় না। সম্পর্ক গড়তে হয়, Nurturing করতে হয়, এবং এর জন্য আন্তরিকতা, সময় আর Effort দিতে হয়। আপনি যদি কারো কাছে গুরুত্ব চান, আগে তাকে গুরুত্ব দিন। আগে বুঝতে হবে, শুনতে হবে, Respect দেখাতে হবে। সময় না দিয়ে সময় আশা করা বোকামি, গুরুত্ব না দিয়ে গুরুত্ব পাওয়ার ইচ্ছা থাকাটা উচিত না, Respect না দিয়ে Respect আশা করতে নেই।  

Relationship building takes time। Relationship- হলো বোঝাপড়া আর সমঝোতার উপর দাঁড়ানো এক দীর্ঘ প্রক্রিয়া। কেউ হুট করেই আপনার জন্য সময় বের করে দেবে না। আপনাকেই আগে প্রমাণ করতে হবে যে আপনি সেই সময় & সম্পর্কের যোগ্য। যখন আন্তরিকতা, Understanding আর Respect একসঙ্গে কাজ করে, তখনই দেখা যাবে- মানুষ আনন্দের সঙ্গে আপনার জন্য সময় বের করছে, আপনার কথা শুনছে, আর আপনাকে সত্যিকারের Value দিচ্ছে।

MARI themes

Powered by Blogger.